নিজস্ব প্রতিবেদক : চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরুজ চিনিকলের এক কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে মৌসুমি শ্রমিক ও দর্শনা পৌর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও কেরুর শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সদস্য কামরুল হাসান লোমান বেতন উত্তোলন করায় অন্য শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রলীগের ওই নেতা উত্তোলন করা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়। দর্শনা কেরুজ কারখানা ব্যবস্থাপক সুমন সাহা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা লোমান কেরু চিনিকলের মৌসুমি কর্মচারী। আখ মাড়াই মৌসুম চলাকালীন ইক্ষু বিভাগে চাকরি করেন তিনি। বছরের বাকি মাসগুলো লোমানের মতো অনেক কর্মচারীকে বিভিন্ন দফতরে দৈনিক হাজিরার বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক পোস্টিং দেয়া হয়। তেমনি ছাত্রলীগ নেতা লোমান কেরু জৈব সার কারখানায় চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত বার্ষিক বনভোজনের নামে ছুটি না নিয়ে পরিচিতদের সাথে তিনি কক্সবাজার অবস্থান করেন। এ দিকে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে লোমান কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তার হাজিরা শীটে ২৩-০২-২৪ থেকে ২৮-০২-’২৪ পর্যন্ত মোট ছয় দিনের হাজিরা কাটা হয়। মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন সাহা এবং ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মো: জাহিদুল হক টুটুল স্বাক্ষরিত মাসিক হাজিরা শিট বেতন শাখায় পাঠিয়ে দেয়। একই বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করায় লোমান হাজিরা শিটটি গোপনে সংগ্রহ করে তা নষ্ট করে ফেলে এবং আরেকটি নতুন হাজিরা শিট তৈরি করে পূর্ণ মাসের হাজিরাসহ কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে বেতন শাখায় জমা দেয়। পরে অন্য সহকর্মীরা বেতন তুলতে যেয়ে দেখে নোমান পূর্ণ মাসের হাজিরা পেলেও তারা ছয় দিনের হাজিরা তিন হাজার ৩৫৪ টাকা কম পায়। তখনই বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে অন্য শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মোশাররফ হোসেনের কানে পৌছালে তিনি কারখানা ব্যবস্থাপক সুমন সাহা ও কেমিস্ট জাহিদুল হক টুটুলকে নিজ কক্ষে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে তারা হাজিরা শিটের স্বাক্ষর জাল বলে সনাক্ত করেন। তবে একটি সূত্র জানায়, ওই বিভাগে কেই ছুটি চাইলে সুমন সাহা তাদের মৌখিক ছুটি দিলেও পরে কমিশন বানিজ্যে তা উত্তোলন করে কমিশন খেতেন। তবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। এদিকে মৌসুমি শ্রমিক ছাত্রলীগ নেতা লোমান জানায়, তিনি তার কর্মকর্তাদের জানিয়ে কক্সবাজারে গেছেন। এখন তারা অস্বীকার করছে। তবে স্বাক্ষর জালের বিষযটি নিয়ে লোমান তার অপরাধ স্বীকার করে মোবাইলে বলেন, অফিসের একজনের প্ররোচনায় পড়ে স্বাক্ষর জাল করেছি। তবে তার নাম বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এদিকে মূল হাজিরা শিট ফেলে দিয়ে জাল হাজিরা শিট জমা দেবার কথা জানাজানি হয়ে গেলে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ছয় দিনের হাজিরার টাকা ফেরত দিয়েছে বলে জানান। তবে এবিষয়ে অনেকে বলেন কর্মকর্তার সাক্ষরিত হাজিরা সির্ট বেতন শাখায় জমা দেওয়ার পর সেটা কিভাবে লোমান হাতে পেলো? বেতন শাখার যোগসাজশ আছে কিনা সেটা তদন্তের দাবি তুলেছে অনেকে। এবিষয়ে কেরুজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন,অপরাধী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগেও এমন ঘটনা কেউ ঘটালে তাকেও ছাড় দেয়া হবে না।