জাহাঙ্গীর আলম : গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মের এই কাঠফাটা রোদ আর গরমে সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস দশা। এমন অবস্থায় রাজধানীতে বেড়েছে ডাবের চাহিদা। তবে গরমে চাহিদা বাড়ায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও। গত কয়েকদিনের ভেতরে আকারভেদে প্রতি পিস ডাবের দাম বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর খামারবাড়ি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, কলাবাগান, ধানমন্ডি ৩২, গাজীপুর ও টঙ্গী ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার পাশে ফুটপাতে ভ্যানে করে বিক্রি করা ডাবের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বড় আকারের প্রতি পিস ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা গরমের এই হাসফাঁস অবস্থার আগেও ১০০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। তবে কারওয়ান বাজারে একেবারেই ছোট আকারের ডাব ৮০ থেকে ১০০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ গত মাসেও এসব ডাবের দাম ২০-৪০ টাকা করে কম ছিল। বিক্রেতারা জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে রাজধানীতে ডাবের চাহিদা বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় সরবরাহ নেই। যার কারণে পাইকারি বাজারেই বেড়েছে ডাবের দাম। আর এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। টঙ্গী ষ্টেশন রোডের রেলগেটে এক ডাব বিক্রেতা বলেন, প্রতি পিস ডাব ১২০ টাকা করে পাইকারি বাজার থেকেই কিনে এনেছি। এরপর আবার পরিবহন খরচ আছে। কিছু ডাব ছোট আছে। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। রোজার সময় এই একই সাইজের ডাব ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করেছি। গরমের কারণে আড়তেই ডাবের দাম বেশি। পান্থপথ সিগনালে ডাব বিক্রি করেন আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, ডাবের চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ বাড়েনি। যার কারণে বাজারে ডাবের যোগান কম। তাই দাম বেশি। গরম কমার আগে ডাবের দাম আর কমার সুযোগ নেই। বরং আরও বাড়তে পারে। ডাবের দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। সুযোগ পেলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেন। পান্থপথ মোড়ে ডাব খেতে খেতে আশিক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ১২০ টাকা দিয়ে মাঝারি আকারের একটি ডাব কিনেছি। এই ডাব কয়দিন আগেও ৮০-৯০ টাকা ছিল। হুট করে তো আর ডাব হয় না যে হুট করে দাম বেড়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা আসলে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ায়। গ্রিন রোডে একটি হাসপাতালে আত্মীয়কে দেখতে এসেছেন মো. ইবরাহিম। ডাব খেতে হাসাপাতাল থেকে নিচে নেমেছেন তারা তিনজন। সবাই একটি করে ডাব খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, দামের কারণে তিনজন মিলে একটি ডাব খাচ্ছেন। ইব্রাহিম বলেন, ৮০-৯০ টাকার ডাব গরম আসতেই ১৪০-১৫০ টাকা হয়ে গেছে। যেন ব্যবসায়ীরা সুযোগের অপেক্ষাই ছিল কখন দাম বাড়াবে। এই সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষকে নিস্ব করে দিচ্ছে। তিনজন মিলে একটি ডাব খেতে হচ্ছে।