নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিদিনই তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙছে চুয়াডাঙ্গা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস। এর আগে ১৯৮৫ সালে ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর চুয়াডাঙ্গায় আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপনের পর ২০১৪ সালে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে ২০১৫ সালের ২২ মে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ সালের ১১ ও ২২ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৮ সালের ১৮ জুন ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০২২ সালের ২৪ ও ২৫ এপ্রিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে টানা ১৮ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। কখনও তীব্র আবার কখনও অতি তীব্র আকার ধারণ করছে জেলার তাপপ্রবাহ। এতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য নেই। দিনের আলো ফোটার পর থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে পরিবেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও প্রকট হচ্ছে রোদের উত্তাপ। আবার সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরমে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। তীব্র হচ্ছে গরমের অনুভূতি। বৃষ্টির পানির জন্য হাহাকার করছে মানুষ। সকাল সকাল শ্রমজীবী মানুষেরা কাজের সন্ধানে বেরিয়েও ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। একটু কাজ করার পরই কাহিল হয়ে পড়ছেন। বিশ্রাম নিচ্ছেন গাছের নিচে। টানা তাপদাহে এ জেলার মানুষ ও প্রাণিকুল ওষ্ঠাগত। নাকাল এ অঞ্চলের জনজীবন। জেলা শহরের বড় বাজার এলাকার কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী বলেন, ফুটপাতে বসে ব্যবসা করায় দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তা থেকে যেন আগুনের আঁচ উঠছে। শরীরের চামড়ায় ফোসকা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঘরেও তো বসে থাকা যাচ্ছে না। কাজের জন্য সড়কের পাশে বসতেই হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত এক পাখিভ্যানচালক বলেন, জেলা শহরে মানুষজন তীব্র গরমে ঘর থেকে বেরই হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তাও সন্ধ্যার পর। দিনে রোদের তাপ আর রাতে ভ্যাপসা গরমে কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। কঠিন হয়ে পড়ছে সবকিছু। আবহাওয়ার সুখবর দিয়ে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, বুধবার থেকে (১ মে) তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। আগামী ৫ মে এর পর চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে।