নিজস্ব প্রতিবেদক : চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৬ সদস্যকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে চেতনা নাশক পাওডার ও চেতনা নাশক মেশানো জুস। ৭ জুন শুক্রবার যথাক্রমে তাদেরকে আটক করা হয়। সূত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ডুগডুগি, শিয়ালমারি পশুর হাট সহ মোট ১১টি পশুর হাট। ঈদ-উল-আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ডুগডুগি ,শিয়ালমারি, আলমডাঙ্গা সরোজগঞ্জ, পশুর হাট গুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। পশুর হাট গুলো শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রায় প্রতি বছরই অজ্ঞান পার্টির মলম পার্টি, প্রতারণা সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম দৌরাত্ম বেড়ে যায়। এছাড়াও পরিবহনগুলোতেও বাসের যাত্রীবেশী অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা টার্গেট করে সাধারণ যাত্রীদের অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়ার সংবাদও বিরল নয়। গত ১৬ই মে ফরিদপুরের ইউনুস শেখ শিয়ালমারি পশু হাটে, ২৩ শে মে জীবননগর কালীগঞ্জ সড়কের পশু হাসপাতালের সামনে সানোয়ার হোসেন (৪৫), ৩০ শে মে আলমডাঙ্গার মোঃ শমসের আলী শিয়ালমারি হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে। সর্বশেষ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ৩ জুন সোমবার ডুগডুগির পশু হাটে নোয়াখালীর মোঃ জসিম উদ্দিন কে টার্গেট করে চেতনা নাশক পুষ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে হাতে নাতে বাগেরহাটের বাচ্চু মাঝি নামের একজন গ্রেপ্তার হয়। এই ঘটনায় দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয় যাহার মামলা নম্বর ০৪ তারিখ ০৩/০৬/২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । এই মামলার রুজুর পর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান সাধারণ মানুষের ঈদ উদযাপনকে নির্বিঘ্ন ও উৎসব মুখর করতে এবং সাধারণ মানুষ যাতে অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি প্রতারক শ্রেণীর অপরাধীদের দ্বারা সর্বস্বান্ত না হয় এবং অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মৃত্যু সহ কোন ধরনের জীবনহানি যাতে না ঘটে ইত্যাদি বিভিন্ন কার্যক্রম কে সামনে রেখে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছেন। নিরাপত্তা পরিকল্পনায় প্রতিটি পশুর হাটে, প্রতিটি বড় বড় শপিংমল, বাস স্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় পোশাকধারী পুলিশের ডিউটির পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ নিয়োগ করে এসব অপরাধীদের ফাঁদ পেতে ধরার নির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শক্রমে অজ্ঞান পার্টির এই চক্রকে গ্রেপ্তারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা, জীবননগর থানা, দর্শনা এবং দামুরহুদা থানা সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করতে থাকে এবং চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতার এর উদ্দেশ্যে কৌশলে ফাঁদ পাতা হয়। এই ফাঁদে আটকা পড়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্য বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থানার -দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মৃত কাশেম মাঝির ছেলে বাচ্চু মাঝি(৪৮), চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলা গ্রামে মৃত গোলাপ মন্ডলের ছেলে হাসেম আলী(৪৮), দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে সালামত(৫৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাহাবুদ্দিন ওরফে শুকচাঁন(৩০), জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে ইব্রা(৫০), জীবননগর উপজেলার মৃগমারী গ্রামের নওশাদ মন্ডলের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক(৪৭) এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এই অজ্ঞান পার্টি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এটা একটা সংঘবদ্ধ চক্র। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ভিকটিম কে চেতনা নাশক প্রয়োগ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তদন্তকালে পুলিশ এই চক্রের বেশ কিছু নাম পেয়েছে তাদের চলমান কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। জনগণের জান-মাল রক্ষায় এই চক্রের সকল সদস্যকে আইনের আওতায় আনার জন্য সুষ্ঠ তদন্ত এবং গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়েছেন পুলিশ ।