নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয় ঘেরাওয়ের জেরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আর কাজে ফেরেননি অনেক আনসার সদস্য। ঢাকার চারটি থানায় করা মামলায় ৪২০ জনের নাম উল্লেখসহ কয়েক হাজার জনকে আসামি করায় আতঙ্কে বাহিনীর সদস্যরা। তবে আনসার সদস্যরা শিগগিরই আগের পোশাকের বদলে নতুন পোশাকে মাঠে ফিরবেন বলে জানালেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বিভিন্ন থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে দেখা যায় আনসার সদস্যদের। সড়কে ছাত্রদের পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও পালন করে এই বাহিনী। পরিস্থিতি বদলে যায় ২০ দিন না পেরোতেই। গেল ২৫ আগষ্ট বিশ্রাম প্রথা বাতিলসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে রাস্তায় নামে আনসার সদস্যরা। ঘেরাও করেন সচিবালয়। পরে সমন্বয়কদের সমর্থনে এগিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের। এ ঘটনার পর থেকেই হতাশা ও আতঙ্কে বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানীর তোপখানা মেট্রোরেল স্টেশনের প্রবেশমুখেই যাত্রীসেবায় ব্যস্ত এক আনসার সদস্য। সিভিল পোশাকে পালন করছেন দায়িত্ব। তিনি বলেন, ডিপার্টমেন্টের মান সম্মান ক্ষুণ্ন হয়ে গেছে। এতদিন ধরে চাকরি করে এখন আমরা নিরুপায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেখানে সবসময় সেবায় নিয়োজিতে থাকতেন আনসার সদস্যরা, সেখানেও একই চিত্র। তারাও অনেকটাই ভীত-সন্ত্রস্ত । হাসপাতালটিতে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য বলেন, আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সিভিলে ডিউটি করতে। আমরা তাই করছি। এদিকে আনসার সদস্যদের অনুপস্থিতিতে বিশৃঙ্খলার কথা জানালেন সেবাপ্রত্যাশীরা। আবার সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগও। কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা হযরত আলী গাজী বলেন, ‘আমি তিন দিন ধরে আছি কোনো আনসার নাই। এখানে ট্রলি পাওয়া যায় না। হুইলচেয়ার পাওয়া যায় না। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকলে এমন বিশৃঙ্খলা হতো না। সারা দেশে ব্যাটালিয়নসহ প্রায় ৫৫ হাজার আনসার সদস্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় মোতায়েনের কথা থাকলেও কাজে যোগ দেননি বেশিরভাগই। বিক্ষোভের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন সদস্যরা জড়িত নন বলে জানান বাহিনীর ডিজি মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ হোসেন। তবে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সদস্যদের ফেরা প্রশ্নে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। রাজধানীতে প্রায় ১৪ হাজার আনসার নিয়োজিত থাকলেও বর্তমানে মাঠে আছেন প্রায় ১০ হাজার ।