নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় মো. এনামুল হক নামের এক বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় দর্শনা পৌরসভার সাবেক মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু এবং ছাত্রলীগ নেতা অপু সরকারসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দর্শনা বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. এনামুল হক বাদী হয়ে গত রবিবার (১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যায় দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের দিন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের দর্শনা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের আলহেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মো. এনামুল হক। ভোট চলাকালীন বিবাদীগণ ধারালো দা, হাসুয়াসহ দেশীয় অস্ত্রপাতি নিয়ে ভোটকেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোটারদেরকে বাইরে বের করে দিয়ে তারা অবৈধ উপায়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে শুরু করে। ওই সময় আতিয়ার রহমান হাবু তার কাছে থাকা একটি পিস্তল নিয়ে অত্র ভোট কেন্দ্র ঘুরে বেড়ায় যার কারণে ভয়ে কেউ কোনো কথা বলে না। ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হওয়ার কারণে আতিয়ার রহমান হাবুর নির্দেশে অপু সরকার, মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, মো. কবির মল্লিক ও মো. আব্দুল হাকিম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ তাদের হাতে থাকা লোহার রড, কাঠের বাটাম ও ধারালো দা-এর উল্টা পিঠ দিয়ে মো. এনামুল হকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখমের সৃষ্টি করে। ঘটনার এক পর্যায়ে আঘাতের কারণে মো. এনামুল হকের বাম পা ভেঙে গুরুতর হাড়ভাঙা জখমের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও পর্যন্ত তার হয়নি এবং তিনি লাঠিতে ভর করে ছাড়া হাঁটতে পারেন না। এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিবাদীগণ প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন ক্ষমতার দাপটে দর্শনা এলাকায় দাঙ্গা, রাহাজানি চাঁদাবাজিসহ তারা সকল প্রকার অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- দর্শনা আজমপুরের হারুন ব্যাপারীর ছেলে অপু সরকার (৩০), দর্শনা বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত আবু বক্কর বাক্কার ছেলে মো. রফিকল ইসলাম রফিক (৫২), দক্ষিণ চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত কহেদ মল্লিকের ছেলে মো. কবির মল্লিক (৪৭), বাসস্ট্যান্ড সিএমবি পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল হাকিম (৫০), বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত মহি উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো. আব্দুল কুদ্দুস (৫৩), মোহাম্মদপুর গ্রামের শ্রী শমরেশ কুমার বিদ্যুৎ (৫৫), দর্শনা বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত নজির আহম্মেদের ছেলে মো. আলী আহম্মেদ (৬০), বাসস্ট্যান্ড মাস্টার পাড়ার মৃত মান্দার ডাক্তারের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম মিন্টু (৫২), বাসসট্যান্ড মাস্টার পাড়ার মৃত ইমদাদুল হক টিপুর ছেলে মো. মহিবুল হক সাধন (৪৫), দর্শনা বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত মনোরুদ্দিনের ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম (৫২), বাসস্ট্যান্ড মাস্টার পাড়ার মৃত মান্দার ডাক্তারের ছেলে মো. মাজেদুল ইসলাম (৪৮), বাসসট্যান্ড পাড়ার মো. ফারাজ উদ্দিন লেবুর ছেলে মো. শরিফ উদ্দিন বাবু (৪৬), বাসস্ট্যান্ড সিএমবি পাড়ার মৃত নবী মিস্ত্রির ছেলে মো. নুর আলী (৫৫), দর্শনা আমতলার মৃত মসলেম খার ছেলে মো. হিরন (৫০) এবং দর্শনা ইসলাম বাজারের মৃত সামসুল ইসলামের ছেলে মো. আতিয়ার রহমান হাবু (৫০)। এবিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি বিপ্লব কুমার শাহা বলেন একটি অভিযোগ পেয়েছি এটা তদন্ত চলছে যাচাই বাঁচাই করে প্রমান পেলে ব্যবস্থা নিবো।