নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে যতো দেরি হবে, দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র ততো বৃদ্ধি পাবে। যেই স্বৈরাচারকে দেশের জনগণ জীবন দিয়ে সংগ্রাম করে বিতাড়িত করেছে, সেই স্বৈরাচার বসে নেই। তারা তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সাথে নিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তারেক রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে দেশের সকলেই যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, এগুলো সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়ন সম্ভব যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন। এর বাইরে, সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সেজন্য জনপ্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচন যত দেরি হবে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসুবিধা কমে যাবে। কৃষকসহ সকলে যেসব সমস্যায় রয়েছেন সেসব সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। একটি নির্বাচনেই সম্ভব দেশের সকল সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান করা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, যে দেশের রাজনীতি রুগ্ন, সেদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই রুগ্ন। বিগত স্বৈরাচার সরকার দেশের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলো আবার জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হলে নাগরিকের ভোটের মাধ্যমে যোগ্য প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করতে হবে। এই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনই বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য। শনিবার চুয়াডাঙ্গা শহরের টাউন মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু প্রমূখ নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন উপলক্ষে আজ সকাল ৯টা থেকেই ডেলিগেট, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা আসতে থাকেন। সকাল ১০টার মধ্যে সম্মেলনস্থল টাউন ফুটবল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) পক্ষ থেকে দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। মির্জা ফখরুল ইসলামসহ মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং আজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত সভাপতি মাহমুদুল হাসান খান বাবু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ ও সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ। বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণে মঞ্চে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতা, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। পরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার আবদুল জব্বার সোনা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির নেত্রী মিলিমা বিশ্বাস মিলি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, দর্শনা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার নাহারুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ জাহান খান, জাসাস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব সেলিম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার লিলি, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক আলী তবা। পরে ডেলিগেটদের গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ছাড়া, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।