টঙ্গী প্রতিনিধি : বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরুর আগেই মানুষে পূর্ণ হয়ে গেছে টঙ্গীর তুরাগ তীরের ময়দান । টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুক্রবার বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরু হবে। তবে একদিন আগেই ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে তাবলিগ জামাতের অনুসারী মানুষের। মাঠে স্থান না পেয়ে অনেকেই অবস্থান নিয়েছেন সড়কের পাশে। বিশ্বের মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ এই সম্মেলনের আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান,দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিমের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর। এর মধ্যে ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মানুষ। তাদের ধর্মীয় কাজে মনোনিবিষ্ট করতে ও ময়দানে উপস্থিত মানুষদের জমিয়ে রাখতে মুরুব্বিরা বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে প্রাথমিক বয়ান দিচ্ছেন। প্রাথমিক বয়ান করেন দিল্লীর মাওলানা আহমদ লাট, বয়ান বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা ওমর ফারুক। আয়োজক কমিটির আরেক সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার থেকেই দলে দলে তাবলিগের অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। তারা মাঠের ভেতরে ঢুকে নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিতে, মাঠে স্থান না পেয়ে অনেকেই অবস্থান নিয়েছেন সড়কের পাশে। এখনও বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসছেন মানুষ। তাদের কাঁধে বা পিঠে ঝুলছে ময়দানে অবস্থানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভারী ব্যাগ মাথায় নিয়েও অনেকে আসছেন ময়দানে। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ আগমন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আয়োজকরা । ময়দানে অবস্থানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে এখনও আসছেন মানুষ। এবার ইজতেমার প্রথম দিনই শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তুরাগ তীরে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজকরা জানান, এবারের জুমার নামাজে ইমামতি করবেন কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা জোবায়ের। প্রতিবারই জুমার নামাজে অংশ নিতে তাবলিগের অনুসারী ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে আসা মানুষ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিতে থাকেন। ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা-সড়কসহ আশপাশের অলিগলিতেও কাতারবদ্ধ হয়ে জুমার নামাজে অংশ নেবেন এসব মানুষ। এবার ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের পূর্ব পাশে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশি মুসল্লিদের কামরার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের মিম্বর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমাম এবং বয়ানের মঞ্চে বয়ানকারী অবস্থান করেন। বয়ান মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। বিশ্ব ইজতেমার জন্য প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটির ওপর ছাউনির মধ্যে বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তাবলিগের অনুসারীদের জন্য জেলাওয়ারি আলাদা খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। বিদেশি তাবলিগ অনুসারীদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধা সংবলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা হয়েছে পুরা এলাকা। বাড়তি সতর্কতার জন্য রয়েছে সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।