নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলটিকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা না হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনও সংশোধন করা হয়েছে। শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ শিগগিরি জারি হবে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে হবে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হবে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বৈঠকের পর এসব কথা বলেন। দেড় মিনিটের বক্তব্যে তিনি শুধু সরকারের সিদ্ধান্ত পড়ে শোনান। কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। দলটি বৈধ সংগঠন হিসেবেই থাকবে। তবে সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং সাক্ষীর সুরক্ষা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না। সংশোধনী অনুযায়ী, মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত দল বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে পারবেন আদালত। বিচারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আগামী সোমবার রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা, বিচারের মুখোমুখি করতে আইন সংশোধন এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনে নামেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতাকর্মী। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ এবং সমাবেশের পর তারা শাহবাগ অবরোধ করে টানা অবস্থান নেন। 'ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য’-এর ব্যানারে লাগাতার এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলাকালে আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান করছিলেন। রাত ১০টার দিকে তারা যমুনার কাছাকাছি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নেন। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর অবস্থানকারীরা উল্লাস করেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীর বিচার করতে পারবে। এতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ ভেরিফায়েড ফেসবুকে জানিয়েছে, অবৈধ সরকারের সব সিদ্ধান্তই অবৈধ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ জাহাঙ্গীর আলম || বার্তা সম্পাদক: শাকিল মাহমুদ শান্ত || টঙ্গী দত্তপাড়া, জহির মার্কেট, টঙ্গী গাজীপুর ঢাকা। E-mail: editorgrambarta@gmail.com যোগাযোগ : ০১৯১১-২৪৫৮৯৫ | ০১৯১৩-৩৪৪৮১৭ | ০১৭৩১-৬১৬২১৫ | ০১৯৭২-৬১৬২১৫