নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়। এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ১৩৯ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় নিহত নূর আলমের পিতা মো. আমির আলী (৪৪) বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকার ডাক্তার নাহিদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
এই মামলায় আসামি করা হয়েছে-আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মতিউর রহমান মতি। এছাড়াও আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আরও প্রায় ১৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনের নির্দেশনা অনুযায়ী- বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, চেন, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের তেলিপাড়ায় হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। এ সময় হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরিভাবে কিল ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথারি মারধর এবং ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে খোরশেদ আলম রশিদসহ (১৯) প্রায় ২৫/৩০ জন আন্দোলনকারীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত জখম করা হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। ওই সময় তাদের ছোড়া গুলিতে বেলা সোয়া ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নূর আলমের (২২) ডান চোখের ওপর অংশ দিয়ে ভেতরে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে নূর আলম নিহত হন। ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোনো আইনি সহায়তা না নিয়ে তাৎক্ষণিক ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবং বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে দেশের বিদ্যমান অরাজকতা পরিস্থিতির কারণে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দিতে দেরি হয়।