নিজস্ব প্রতিবেদক : চুয়াডাঙ্গার আইন্দিপুরে আলমগীর হত্যা মামলার মূলরহস্য উন্মোচন ও ঘটনার সাথে জড়িত ৩জনকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ বিকাল ০৫:১৫ ঘটিকায় ডিবি, চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। সূত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানাধীন ভালাইপুর পুরাতন মসজিদ পাড়ার মৃত আব্দুস সাত্তার এর ছেলে ভিকটিম আলমগীর হোসেন আলম (৪১)পেশায় ভ্যানচালক। প্রতিদিনের ন্যায় গত ০২ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ রাত আনুমানিক ৯টায় মোটর চালিত পাখিভ্যান ভাড়া মারার উদ্দেশ্যে বের হয়। বাড়ি ফেরার সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও বাড়িতে ফিরে না আসায় আলমগীরের মোবাইল ফোনে কল দিলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ভিকটিম আলমগীরের পরিবারের লোকজন গত ০৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ সকাল ৮টায় আলমডাঙ্গা থানাধীন আইন্দিপুর গ্রামস্থ ছাতিয়ানতলা মাঠে রওশন মাস্টারের বাঁশ বাগানের ভাইমারা(জিয়া) খালে কচুড়িপানার নিচে ভিকটিমের ভাসমান মৃতদেহ দেখতে পায়। বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম আলমগীরের মা জহুরা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানার মামলা নং-০৩ তারিখ ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা,বিপিএম-সেবা মহোদয় ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল),চুয়াডাঙ্গার নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষে মাঠে নামে। অবশেষে ডিবি, চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম গত ২০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার বড়দল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ ইমরান(২৪), পিতা-মৃত হাফিজুল ও মোঃ মাসুম(২০), পিতা-মোঃ মনির উদ্দিন, উভয় সাং-আইন্দিপুর, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গাদ্বয়কে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ঘটনার মাস্টার মাইন্ড মোঃ জিনারুল হক, পিতা-মোঃ সবদ আলী,সাং-শিবপুর, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা’কে গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ বিকাল ০৫:১৫ ঘটিকায় ডিবি, চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা হতে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক জানা যায়,আসামীরা আর্থিক সংকটে থাকার দরুণ ভ্যান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।গত ০২ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ আসামীরা ভালাইপুর থেকে ৩ হাত নাইলনের রশি ক্রয় করে এবং ভিকটিম আলমগীরের ভ্যান ভাড়া নিয়ে বড়গাংণীর উদ্দেশ্য রওনা করে। পথিমধ্যে রাত আনুমানিক ১১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী মাসুম ইচ্ছাকৃতভাবে তার পায়ের স্যান্ডেল ফেলে দেয়, যাতে ভ্যানটি থামানো যায়। ভিকটিম আলমগীর ভ্যান থামালে আসামী জিনারুল ভিকটিমের জামার কলার ধরে নিচে নামালে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ভিকটিমকে রাস্তার পাশে গর্তে পড়ে যায়। ভিকটিম কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামীরা গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে এবং ভিকটিমের মরদেহ রাস্তা পার করে খালের কচুড়িপানার নিচে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পাখিভ্যানটি ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রয় করে প্রত্যেকে ১৬ জাজার টাকা করে সমান ভাগ করে নেয়।