জাহাঙ্গীর আলম : শিক্ষা যদি হয় জাতির মেরুদণ্ড তবে শিক্ষককে বলা হবে শিক্ষার মেরুদণ্ড। শিক্ষক হলেন ন্যায়-নীতি আর আদর্শের প্রতীক। এরই বাস্তব প্রমাণ টঙ্গী সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ওয়াদুদুর রহমান স্যার। সম্প্রতি টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের মানবিক অধ্যক্ষ মোঃ ওয়াদুদুর রহমানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিতিমত ঘুরপাক খাচ্ছে। ভিডিওতে দেখা গেছে পিতৃস্নেহে বৃষ্টি ভেজা ছেলে-মেয়েদের মাথার পানি, নিজ হাতে মুছে দিচ্ছেন। এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন ভাইরাল হয়েছে তেমনি ভিডিও দেখে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। স্যারের এই ভিডিও সমাজে দৃষ্টান্ত উদহারন হয়ে থাকবে যুগ থেকে যুগান্তরে। স্থানীয় এক শিক্ষানুরাগী বলেন একজন শিক্ষক মানুষ তৈরি করার কারিগর প্রতিটা শিক্ষকেরই এমন হওয়া উচিত তিনি যে কাজটি করেছেন সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষায় অবদান রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা যায় বা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা যায় তার দৃষ্টান্ত উদহারন হলো ওয়াদুদুর রহমান স্যার। নানা প্রতিকূল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুর জেলার টঙ্গী অঞ্চলে শিক্ষার হার কম হওয়ার কারণ ছিল সচেতনতা ও সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব। এরই মাঝে এ এলাকায় শিক্ষার বিস্তারে যে কয়েকজন ব্যক্তির অবদান অনস্বীকার্য তাদের অন্যতম হচ্ছে গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ও অত্র প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গাজীপুর উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এ্যাড মোঃ আজমত উল্লাহ খাঁন এর দিক নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলছে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান স্যার। সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ একটি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং টঙ্গীর সম্ভ্রান্ত সরকার পরিবারের সন্তান শাহাজ উদ্দিন সরকার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে ( বাংলা ১৩৯৪ সালে ) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি টঙ্গী পৌরসভার একজন কিংবদন্তি নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টঙ্গী, ভরান ও আরিচপুরের বঞ্চিত মানুষের জন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনুধাবন করেন এবং তাই তিনি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট নির্মাণ ব্যয়ের সর্বোচ্চ ব্যয় দিয়েছেন এই মহান হৃদয়বান ব্যক্তি। এসময় ওই এলাকার আরও অনেক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব এই সমাজকল্যাণমূলক কাজে সহযোগিতা করেন। সর্বসম্মতিক্রমে, এই প্রতিষ্ঠানটি সিরাজ উদ্দিন সরকারের নামে প্রতিষ্ঠিত হয় যিনি একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী এবং সাহাজ উদ্দিন সরকারের বড় ভাই ছিলেন। এই ইনস্টিটিউটের প্রাথমিক বছরগুলিতে খুব কম ছাত্র ছিল। প্রথম বর্ষে ভর্তির পরিমাণ ছিল মাত্র ৮৭ জন। ওই সময়ে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তারা এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ১৯৯৩ ইং সালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ১৯৯৫ইং সালে, ছাত্রদের বাসস্থানের অতিরিক্ত চাপের কারণে দুটি শিফট চালু করা হয়েছে। মেয়েরা সকালের শিফটে স্কুলে যায় আর ছেলেরা তাদের ক্লাসে দুপুর থেকে শুরু করে। একটি দেশের উন্নয়ন করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ থাকার কোনো বিকল্প নেই কারণ দেশের দক্ষ মানবসম্পদ দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুঁজিতে পরিণত হবে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে বৃত্তিমূলক বিভাগটি ১৯৯৫ইং সালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, ২০১৩ইং সালে, সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন একাডেমিক ফলাফলে ক্রমাগত সাফল্য বিবেচনা করে এবং এই সম্প্রদায়ের শেখার ক্রমবর্ধমান প্রয়োজন মেটাতে কলেজে উন্নীত করা হয়েছে। যে জ্ঞানের প্রদীপশিখা তিনি এ অঞ্চলে প্রজ্বলিত করে গেছেন, তার ঋণ শোধ করার মতো নয়।