নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের টঙ্গীতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নামের ওষুধ উৎপাদন কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন কাঁঠাল দিয়ে এলাকায় কারখানাটির প্রধান ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কারখানার সামনের শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করছেন। শ্রমিকরা জানান, বুধবার সকালে কারখানাটির প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কারখানায় কাজে যোগ দিতে আসেন। এ সময় তাদের ছয় দফা দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো মেনে না নেওয়ায় শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে কারখানাটির সমনের শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শ্রমিকেরা।শ্রমিকদের ছয় দফা হলো, পাঁচ বছর ধরে কর্মরত শ্রমিকদের চাকরিতে স্থায়ীকরণ, খাবারে বৈষম্য বন্ধ, ঠিকাদারের অধীনে নয়, কারখানার অধীনে চাকরি করার সুযোগ, প্রতি দুই বছর পর পর ডিমান্ডের ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি, অবসরকালীন ভাতা প্রদান এবং এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত না করা। দাবি মেনে না নেওয়ায় দুপুর পর্যন্ত শ্রমিকেরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এবিষয়ে আন্দোলনরত শ্রমিক ফয়সাল আহমেদ বলেন, তাদের শ্রম ঘণ্টা, ন্যায্য মজুরি, কাজের স্থায়ীকরন নিশ্চিয়তা এবং নিরাপত্তা কোনটাই নাই। তিনি বলেন, সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আদায় করতে পারিনি। আমাদের বর্তমান দিন হাজিরা ৩৫০ টাকা এখন থেকে আবার ১৫ টাকা করে সার্ভিস চার্জ কেটে নেওয়া হয়। অনেক শ্রমিক ১০/১২ বছর যাবৎ কাজ করছেন কিন্তু তাদেরকে স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। তাদের শুরুতে যে বেতন সে বেতনই আছে। এগুলো সেচ্ছাচারীতা ছাড়া কিছুই না। ক্ষমতার অপব্যবহারে কি করা যাবে আর কি করা যায় না তা তারা ভুলেই গেছেন। শ্রমিক শাহাআলম বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চরমে, শ্রমিকরা দুই বেলা ভাত জোটাতে পারছে না। এ স্বল্প বেতনে অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাতে পারছেনা। আমরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। আন্দোলনে উপস্থিত শ্রমিকদের দাবি,কোহিনূর ট্রেডাস স্বত্বাধিকারী ক্ষমতাসীন অস্থায়ী শ্রমিক কন্ট্রাক্টর মতিন আমাদের শ্রমিকদের একদিকে সীমাহীন চরম শোষণ-বঞ্চনার নিষ্ঠুর শিকারে পরিণত করেছে। অন্যদিকে প্রতিবাদের অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। তারা নিজেদের কল্যাণে ব্যস্ত। এতদিন আমরা কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু এখন সময় এসেছে কর্ম ক্ষেত্রে বৈষম্যতা দুরীকরনে এবং ন্যায্য দাবি আদায়ের। যোগাযোগ করা হলে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের কেউ গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) সাইফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে কারখানায় এসেছি। শ্রমিকদের ছয় দফা দাবি নিয়ে কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।