• বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
টঙ্গীতে বিএনপি ও তাঁতিদল নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পতিত আ.লীগের চাঁদাবাজ-দখলদাররা বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে: আমিনুল হক আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা পাবে : আমিনুল হক গাজীপুরে দিনভর তিতাসের অভিযান : ২৫০ ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ২৫০ ফুট পাইপ জব্দ, ১ জনকে ২০ হাজার টাকা জরিমান মোহাম্মদপুর ৩৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলনী ও আনন্দ ভ্রমণ অনুষ্ঠিত বিএনপি কখনোই মবকে প্রশ্রয় দেয় না : আমিনুল হক ১৭ বছরের আওয়ামী জুলুম ভুলে গেলে চলবে না : আমিনুল হক শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক নিয়ে যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় : কার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ালেন ডিসি আশরাফ, জানা গেল পরিচয় পলিথিন উৎপাদনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার : টাস্কফোর্স অভিযানে পলিথিন জব্দ, মালিকের ৩ মাসের কারাদণ্ড পল্লবীতে মুসলিম বাজার সমিতির মতবিনিময় সভায় আমিনুল হক: ক্ষতিগ্রস্তদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে দোকান দিতে হবে

দূরের বরফ দেশঃ সামিনা খাতুন রশ্নি

grambarta / ১২৩ ভিউ
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :  বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নেশা বই মেলা এখন অভ্যাস, সন্তানের হাত ধরে একবার মেলাতে ঢু না দিলে তৃপ্তি আসে না। মনে হয় কি জানি হারিয়ে গেল। মেয়ের আবদারে সিসিমপুর দেখা আর কিছু শিশুতোষ গল্পের বই কেনা। তারপরও প্রথমার প্যাভিলিয়নটা না ঘুরে পারলাম না। আছে নামীদামী সব লেখকের বই। আনিসুল হক স্যারতো কখনো আমার মাকে-র জন্য অটোগ্রাফ দিতে দিতে মিষ্টি ক্লান্ত। পাশেই মৃদু হেসে দাড়িয়ে এক যুবক। হাতে ‘দূরের বরফ দেশ’ নামক একটি বই। মলাটেই চোখ আটকে যায়। পরিচয় মিলল লেখকের নাম নর্মদা মিথুন। ৪৭ পাতার একটি কাব্যগ্রন্থ। যেখানে কবিতা আছে ৩৭টি। দূরের বরফদেশ নাম টা মাথার ভেতর এক বরফে ঢাকা সাদা-শুভ্র চিত্র রেখে যায়। ঠান্ডায় হিম হিম একটা অনুভূতি দেয়। মূল কবিতায় চলে গেলাম সূচিপত্র দেখে।

সামনে আসছে বিরাট লোডশেডিং
খবর দিচ্ছে গরমকালের হাওয়া
তুমিতো এখন দূরের বরফদেশ
শীতল থাকবে-এটাই পরম চাওয়া।

না আছে বরফ না আছে শীতশুভ্র। এই যে একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার। দেশের কোটি মানুষের আতঙ্কের নাম লোড শেডিং। কি নিগুঢ় ভাব প্রকাশ। কি অবলীলায় সবার গরমের আগমীতে দেহ হিম করা ভয়ের শির শির অনূভুতি। এতটা সুন্দর করে অসুন্দর একটি বিষয়কে উপস্থাপন নতুন এই লেখক কিংবা কবি যাই বলি না কেন তাঁর নিখাদ চিন্তার ফল। ‘তোমাকে হারাতে গিয়ে হের যাই আমি’ কি অসাধারণ এক প্রকাশ। সত্যিইতো কাকে হারাতে চাই আমি। প্রিয়কে নাকি অপ্রিয়কে, শক্রুকে নাকি বন্ধুকে-কার কাছে হারব কাকেই বা হারাব। কবিতাটির নাম ‘হেরে যাওয়া’। এই দুটি কবিতাই বইটিকে নিজের করে পাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিনে নিলাম প্রথমা থেকে। আর এক নিশ্বাসে বাসায় ফিরতেই শেষ বইটি।

‘না নাগরিক না সংখ্যালঘু’ লেখকের এই আকুতিতে আরও একবার বাংলার মধ্যযুগের কবি বড়ু চণ্ডিদাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক বাণী ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’- আরও একবার আন্দোলিত হয় হৃদয়ে। জাত, ধর্ম-বর্ণ সব কিছুর উপরে গিয়ে লেখকের শুধু নাগরিক হিসেবে মানুষের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার এত সুন্দর উপস্থাপন সত্যিই ভাবায়। তাইতো আমি কি মুসলিম নাকি হিন্দু নাকি বৌদ্ধ নাকি খ্রিষ্টান নাকি উপজাতি কোনটা আমার পরিচয়। বাঙালি জাতি ছাপিয়ে আমি একজন বাংলার নাগরিক এটাই সত্য। এই বাংলায় স্বাধীনতার পর থেকেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা মনে ভয় ধরায়। কোন ধর্মের কোন উৎসব আসলে সবাই মিলে সেটা উদযাপন করার পরিবর্তে ভেতরে কাজ করে আতঙ্ক। ছোট জাতিগোষ্ঠীকে থাকতে হয় ভয়ে। এই যে স্মার্ট বাংলাদেশ কিংবা ডিজিটাল বাংলাদেশ যাই বলি না কেন কোন মাধ্যমেই যেন সন্ত্রাসীরা ছাড়ে না দাঙ্গার পালে হাওয়া দিতে। নর্মদা মিথুনের লেখায় উঠে এসেছে প্রতিবাদ। কে বানিয়েছে এই জাতপাত, কেই-বা পারে মানুষকে ধর্মের মোড়কে মোড়াতে। সবাইতো মানুষ। মিথুনের মতো সূত্র খুজে পাইনা আমিও। নিজেদের বিদ্যাবুদ্ধির বিকাশ হোক, এটা প্রত্যাশা করি। তেমনি মিথুনের সঙ্গে ভাবের মিলে আমিও বলতে চাই ‘কোথাকার কোন ভূমি সন্তান নিয়ম বানাও তুমি’। নর্মদা মিথুন শুধু প্রতিবাদ করেই ক্ষান্ত দেননি, তার মনজোনাকি কবিতায় শুনিয়েছেন আশার কথা। সকল অন্ধকার দূর করে আলো আসবেই। হয়তো তাই লিখেছেন ‘ দু’ হাত তুলে আধার তাড়াই। তাঁর কবিতার ভাষা সরল, কিন্তু সেই সরলতার মধ্যে আমরা খুঁজে পাব আমাদের অন্তর্গত বেদনা, হাহাকার ও ভালোবাসার গল্পগুলো। বই মেলায় অনেক অনেক বইয়ের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধ জাগ্রত করে এমন বই। খুব কমই খুজে পাওয়া যায় এখন এমন নীরব প্রতিবাদ কিংবা অভিব্যক্তির বই। তরুণ কবি নর্মদা মিথুনের জন্য শুভকামনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর